সমস্যা ২৩। সকাল বেলা পুকুরের পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন ঘাটতির জন্য প্রথমে সিলভার কার্প, বিগহেড কার্প পরে আস্তে আস্তে সব প্রজাতির মাছ খাবি খেতে থাকে। পানিতে গভীর বা অগভীর নলকূপের পানি দিলেও অক্সিজেন ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বিভিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ বা উৎপাদনকারী রাসায়নিক দ্রব্য প্রয়োগ করেও মাছের খাবি খাওয়া বন্ধ করা যাচ্ছে না। করণীয় কী?
কারণঃ একজন খামারীর পুকুরে সকাল বেলা দ্রবীভূত অক্সিজেনের ঘাটতি হতে পারে। দ্রবীভূত অক্সিজেনের ঘাটতি হওয়ার বিভিন্ন কারণও আছে। যেমন- পুকুরে অনেক সময় মাছের চাহিদার অতিরিক্ত প্রাণী প্যাঙ্কটনের কারণে পুকুরে অক্সিজেন ঘাটতি হতে পারে। পুকুরে দ্রবীভূত অক্সিজেন মাছ সহ অন্যান্য বিভিন্ন জলজ ও উভচর জীবের প্রয়োজন হয়। সাধারণত একটি উর্বর পুকুরে দ্রবীভূত অক্সিজেনের শতকরা ৪০ হতে প্রায় ৫০ ভাগ মাছের জন্য প্রয়োজন হয়। বাকি অক্সিজেন বিভিন্ন জীব যেমন প্যাঙ্কটন সহ ব্যাকটেরিয়া, সাপ, ব্যাঙ, অমেরুদন্ডী প্রাণী গ্রহণ করে। যদি কোন কারণে পুকুরে প্রাণী প্যাঙ্কটন বা অন্যান্য অমেরুদন্ডী প্রাণীর পরিমাণ পুকুরের ধারন ক্ষমতা বা চাহিদার তুলনায় বেশি হয়ে যায়, তখন ঐ সমস্ত জীবের জৈবিক কার্যক্রম পরিচালনায় অতিরিক্ত অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ে। মাছ ছাড়া অন্যান্য জীব সংখ্যা বেশি থাকার কারণে দ্রুত জলজ পরিবেশ হতে অক্সিজেন গ্রহণ করে, ফলে মাছের দ্রাবীভূত অক্সিজেনের অভাব পরিলক্ষিত হয়। বিভিন্ন রকম রাসায়নিক প্রয়োগ করে জলাশয়ে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়ালেও মাছ খুব কম তা গ্রহণ করতে পারে। ফলে অক্সিজেন স্বল্পতার জন্য মাছ মারা যায়।
প্রতিকারঃ
এ অবস্থা নিরসনের জন্য পুকুরে প্রথম থেকেই চাহিদা অনুযায়ী সম্পূরক খাদ্য, রাসায়নিক ও জৈব সার প্রয়োগ করা প্রয়োজন। কোনক্রমেই অতিরিক্ত সার বা সম্পূরক খাবার প্রয়োগ করা যাবে না। সকালে পুকুরে মাছ খাবি খাওয়ার সময় প্রাণী প্লাংটন পুকুরের পানির উপরে চক্রাকারে দলবদ্ধ হয়ে সাঁতার কাটলে বিঘা প্রতি ৫ হতে ৭ ফুট পানির জন্য পর পর দু সপ্তাহ ৪০ গ্রাম রিপকর্ড, ডেসিস বা অ্যাসিমেক্স প্রয়োগ করে প্রাণী প্লাংটনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। রিপকর্ড বা এ জাতীয় রাসায়নিক প্রয়োগ করার পর অগভীর বা গভীর নলকূপের পানি ফোয়ারা করে পুকুরে প্রয়োগ করা যেতে পারে। এছাড়া, রিপকর্ড বা এজাতীয় রাসায়নিক প্রয়োগের পর বিঘা প্রতি ৫ হতে ৭ ফুট পড় গভীরতার পুকুরে ৬০ হতে ৭০ গ্রাম হারে অক্সি গোল্ড, অক্সিমোর ইত্যাদি প্রয়োগ করা যেতে পারে।
বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুনঃ | ০১৭৬৯৪৫৯৭৫৮ |
sufonageshwari@fisheries.gov.bd |
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস